শেখ রেহানার মেয়ে ও যুক্তরাজ্যের লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে পূর্বাচল প্লট কেলেঙ্কারিতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। টিউলিপ সিদ্দিক একজন ব্রিটিশ‑বাংলাদেশি সংসদ সদস্য। তিনি বর্তমানে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট এলাকা থেকে নির্বাচিত এবং Labour পার্টির এমপি সদস্য। তিনি আগে Economic Secretary to the Treasury পদে কাজ করেছিলেন, কিন্তু ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে পদত্যাগ করেন, কারণ তার নাম জড়িয়েছিল বাংলাদেশের দুর্নীতি তদন্তে। এইবার খবর, তিনি ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে Bangladesh এর Anti‑Corruption Commission-এর (ACC) বিবেচনায় আছেন, যেখানে অভিযোগ উঠেছে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা Purbachal New Town Project থেকে অনিয়মের মাধ্যমে জমি নিয়েছেন। ACC জানিয়েছে, তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এর মাধ্যমে একটি ৭২০০ স্কয়ার ফুট সরকারি প্লট পেয়েছেন, যা তারা করেনি বলে দাবি করেন দুই পক্ষই।
২০২৫ সালের আগস্ট ১১ তারিখে বাংলাদেশে তাঁর বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল। দেশটির দুইটি আদালত ২৯ জনের মধ্যে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে, কিন্তু টিউলিপ সিদ্দিক এখনও কোনো সরকারি বা আদালত‑নোটিশ পাননি বলে জানিয়েছেন। তার আইনজীবীরা বলেছেন, প্রায় এক বছর ধরে ACC বিভিন্ন বার্তা ছড়াচ্ছে, কিন্তু প্রতিশ্রুত কোনো অফিশিয়াল যোগাযোগ বা মামলা নথি তাদের কাছে পৌঁছায়নি তাই তিনি আদালতেও হাজির হননি। তিনি আরো বলোন তারা এই মামলাকে আখ্যায়িত করেছেন “রাজনৈতিকভাবে চালিত মানহানিকর প্রচারণা”।

সাবেক মন্ত্রীর বক্তব্য, তিনি কোনো Purbachal-এ জমির মালিক নন, এবং কখনোই কোনো অবৈধ জমি গ্রহণ করেননি। তার আইনজীবীরা আরও বলেন, “সালগুলো ধরে ফাঁসানো তথ্য নির্ভরযোগ্য নয়, তার আগেই তার বিরুদ্ধে যে প্রচার চালানো হয়েছে, এটি একটি ভাঙা পথের মতো”। টিউলিপের পরিবারে বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এবং মিডিয়ার প্রচারণার পর তাকে Labour ফ্রন্ট বেঞ্চ তাথা এমপি পদ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়, কারণ তার রাজনৈতিক দায়িত্ব তার নামের সাথে যুক্ত আর্থিক বিতর্কে বিভ্রাট তৈরি করছিল।
টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে আলোচনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া যেমন BBC, FT, Sky News জানিয়েছে এটি শুধু ব্যক্তিগত সমালোচনা নয়, বরং একটি রাজনৈতিক ও আইনি মামলা, যেখানে বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পরও কোনো অফিসিয়াল নোটিশ না পাওয়া সম্পর্কে তার আইনজীবীরা উদ্বিগ্ন প্রকাশ করেছেন।
এখন প্রশ্ন উঠেছে, যদি তিনি ঢাকা যাননি কিংবা আদালতে হাজিরা না দেন, তাহলে কী হবে? আদালত ঘোষণা করেছে, তার ব্যক্তিগত অনুপস্থিতিতেও বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর ফলে trial in absence হয়, অর্থাৎ তার অনুপস্থিতিতেই বিচার শেষ হতে পারে। কিন্তু তার আইনজীবীরা বলেছেন, এটি একটি একতরফা ও সুনির্দিষ্ট তদন্তের অভাব প্রকাশ করছে।

এই ঘটনা বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার সাথে জড়িত। শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তাঁর পরিবার ও রাজনৈতিক সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। টিউলিপ সিদ্দিকের নাম অন্তরে আসে সেই প্রসঙ্গে, Rooppur পারমাণবিক প্রকল্প ও Purbachal‑এর জমির কেলেঙ্কারি নিয়ে। ACC জানায়, ২০১৩ সালে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তিতে কোটি কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে, বলা হচ্ছে এই চুক্তির সাথে যুক্ত-৫ বিলিয়ন ডলার আত্মসাতের আভিযোগ রয়েছে টিউলিপ সিদ্দিক ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে, যার তদন্ত চলছে,।
তেমন অবস্থায় টিউলিপ বলছেন, “আমি কোথাও যোগাযোগ পাইনি, কোনো নোটিশ পাইনি” যা বিষয়টিকে আরও জটিল করে তোলে। তার আইনজীবীরা যোগ করেন যে: “ এই মামলায় উচ্চস্তরের তদন্ত হওয়া উচিত, যেটা যুক্তিসঙ্গত ও স্বচ্ছ হবে, এসকল অপ্রতিরোধ্য প্রচারণা বন্ধ করা উচিত”।
এ ছাড়া ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ বিল্লাহ হোসেন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, ৩১ জুলাই পর্যন্ত আসামিদের পক্ষে আদালতে কোনো আবেদন করা হয়নি। এবং টিউলিপ সিদ্দিক সহ অন্যান আসামিদের পক্ষে কোনো প্রকার চেষ্টা না থাকায় মামলার শুনানি শেষ হয়।
৩১ জুলাই ঢাকার দুটি আদালত অর্থ আত্মসাৎ মামলার অভিযোগে ছয়টি মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ ২৯ আসামির বিরুদ্ধে অভিযুক্ত করেন।